খুলনা ব্যুরোঃ
খুলনায় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে যাওয়া চিকিৎসকরা সাত দিনের জন্য তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
আজ শনিবার (০৪ মার্চ) খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সঙ্গে বিএমএ নেতাদের বৈঠকের পর শর্তসাপেক্ষে সাত দিনের জন্য কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কথা জানানো হয় চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে।
ঘোষণার পর চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে আগামী ৭ দিনের মধ্যে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নাঈম শেখকে (সাতক্ষীরা সদর) গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা এবং ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের শর্ত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাশিদা সুলতানা, খুলনা বিএমএর সভাপতি ডা. বাহারুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মেহেদি নেওয়াজসহ চিকিৎসকরা বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা জেলা পুলিশে কর্মরত এএসআই নাঈমুজ্জামান শেখ ও তার কয়েকজন সঙ্গী নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন চিকিৎসকরা। ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে তারা অস্ত্রোপচার কক্ষে ঢুকে ডা. নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর করেন।
ওই ঘটনায় ডা. নিশাত আবদুল্লাহ বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। বুধবার (১ মার্চ) একই থানায় এএসআই নাঈমুজ্জামান শেখের স্ত্রী নুসরাত আরা ময়না বাদী হয়ে ডা. নিশাত আবদুল্লাহ এবং হক নার্সিং হোমের মালিক নুরুল হক ফকিরের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন।
মারধরের ঘটনায় গত বুধবার (১ মার্চ) ভোর ছয়টা থেকে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছেন চিকিৎসকরা। এর ফলে চার দিন ধরে খুলনার সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরাও প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন না।
চিকিৎসকদের দাবি, দায়ী পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের কর্মস্থলে ফেরাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হয়।
সংকট নিরসনে শনিবার সকালে বিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন খুলনা সিটির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। বৈঠকে মেয়রের আশ্বাসে শর্তসাপেক্ষে সাত দিনের জন্য কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা।
এর আগে সকালে খুলনার বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. শহিদুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, চিকিৎসকদের আজই যেকোনো সময় কর্মবিরতি স্থগিত করবেন। তিনি বলেছিলেন, ‘শনিবার যেকোনো সময় বিএমএ’র সভাপতি শেখ বাহরুল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন।’ এর কিছু সময় পরই কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা আসে।
0 Comments