সম্মান অর্জন করতে যুগের পর যুগ সময় লাগে কিন্তু হারাতে কয়েক মিনিট-ই যথেষ্ট।
আমরা সবসময় ই কান নিয়েছে চিলে গল্পের ন্যায় চিলের পেছনে ছুটতে অভ্যস্ত কিন্তু কানে হাত দিয়ে দেখিনা কান ঠিক জায়গা মতো আছে কিনা।
কয়েকদিন ধরে দুমকি উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন পরিক্ষিত সৈনিক Rezaul Haque Razon ভাইকে নিয়ে ফেসবুক সরগরম ছিলো।
শুনলাম তার নামে মিথ্যে হয়রানীমূলক ছাগল চুরির অভিযোগ দিয়েছে তার প্রতিপক্ষ কেউ।
ঘটনার সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই স্থানীয় কয়েকজন ফেসবুক সাংবাদিক ফলাও করে সেটা প্রচার করলো।
রাজন ভাই জামিনে বাড়ি ফিরেছেন কিন্তু যে সম্মান তিনি হারিয়েছেন তা কি আর কোনদিন ফিরে পাবেন?
পাবেন না।
তবে যারা সত্যতা যাচাই না করেই হুটহাট নিউজ করেছিল একটু খোঁজ নিলেই দেখবেন সাংবাদিকতার উপর এদের তেমন কোন পড়াশোনা নাই,নাই কোন ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট।কিন্তু তারা কোন না কোন স্থানীয় পত্রিকা বা মিডিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন এবং কোন কিছুর গন্ধ পেলেই আগে ফেসবুকে তুলে ধরছেন।আমি তাদেরকে ছোট করতে চাচ্ছিনা।মত প্রকাশের স্বাধীনতা তো সবারই আছে।
কিন্তু নিউজ করার আগে সত্যমিথ্যা যাচাই না করার প্রবণতা ইদানীং আমরা খুব বেশি মাত্রায় লক্ষ করছি।
এবার আসি গতকালের ঘটনায়।
ডাঃ Nasir Uddin,প্রধান মেডিকেল অফিসার,পবিপ্রবি এর নামে ছোট ভাই Rajibul Raj এই গ্রুপ এবং তার নিজ ওয়ালে একটি পোস্ট দিয়েছে যে তার শ্বাশুড়ি ডাঃ নাসির উদ্দিন কে স্যার সম্বোধন না করে ভাই বলায় তিনি উত্তেজিত হয়ে তাকে বাজে কথা বলেছেন।
একথা শুনে আপনারা যথারীতি ডাক্তারের চৌদ্ধ গোষ্ঠী উদ্ধার করেছেন দেখলাম।
কিন্তু আপনারা কেউ কি ডাক্তার সাহেবের মতামত জানার জন্য অপেক্ষা করেছেন?
করেন নাই।
তার সাথে আসলে কি হয়েছিল একবার জানতেও চান নাই।
কারন আপনারা ধরেই নিয়েছেন পোস্টদাতা যা বলেছে তা হান্ড্রেড পার্সেন্ট সত্যি।
আমি বলবোনা পোস্ট দাতা মিথ্যে বলেছে।
তবে এটা অবশ্যই বলবো সে ঢালাওভাবে ডাক্তারের বদনাম ই করেছে এবং তার শ্বাশুড়ির আচরণে কোন সমস্যা ছিল কিনা সেটা সে সম্পূর্ণভাবেই ইগনোর করে গেছে।
প্রথমত আমি যেটুকু শুনলাম ভদ্রমহিলা কোন পারমিশন ছাড়াই ওনার রুমে হুট করে ঢুকে জিজ্ঞেস করেছেন ভাই এখানে আল্ট্রা কোথায় করে?
কথার টোন সম্ভবত একটু উঁচু ছিলো।
নাসির সাহেব বিজি ছিলেন তাই বলেছেন এখানে ভাই ভাই না করে কাউন্টারে খোঁজ নেন।
এতেই নাকি ভদ্রমহিলা উত্তেজিত হয়ে আর্গুমেন্টে জড়ান।
এক পর্যায়ে ডাক্তার সাহেব তড়িঘড়ি করে স্থান ত্যাগ করেন।
যাই হোক।আমি ধরে নিলাম ভাই/স্যার ডাকা নিয়েই হয়ত গন্ডগোলের শুরু।
কিন্তু আমার প্রশ্ন যদি উনি শিক্ষিত একজন মহিলাই হয়ে থাকেন তবে নিশ্চয়ই এই ম্যানারটুকু জানার কথা যে,একজন ডাক্তারের রুমে পারমিশন নিয়ে ঢুকতে হয় এবং মার্জিতভাবে সম্বোধন করেই কিছু জিজ্ঞেস করতে হয়।
যদিও সম্বোধন ডিপেন্ড করে পারস্পরিক চেনাজানার উপর।ভাই হলে ভাই,মামা হলে মামা আর কেউ না হলে সম্মানিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে স্যার।এটাই তো এ দেশের কালচার।বাইরের দেশে কেউ কাউকে স্যার বলেনা।ব্রাদার বলে।
যাই হোক,থানায় গেলে নবম গ্রেডের নন-ক্যাডার একজন ওসিকে স্যার বলতে বলতে মুখে ফ্যানা তোলা এই আমরাই পঞ্চম গ্রেডের একজন কর্মকর্তাকে বলি এই ভাই।
এতে অবশ্য আমরা অনেকেই অভ্যস্ত বলে কিছু মনে করিনা কারন গ্রামের অনেক অশিক্ষিত লোকজন ই আসলে বুঝে উঠতে পারেনা কি সম্বোধন করা উচিৎ।
তাই এখানে দোষের কিচ্ছু নাই।
কে কীভাবে নিলো সেইটা একটা ম্যাটার।
এতো কথা লিখলাম।
কারন আমি উপরোক্ত দুই ঘটনায়ই কস্ট পেয়েছি।
একদিকে রাজিবুল খুব কাছের ছোট ভাই।
সে তার শ্বাশুড়ির অপমান সহ্য করতে না পেরে সকলের সাথে ঘটনা শেয়ার করেছে।
না পারাটাই স্বাভাবিক।তার অপমান তো আমাদের ও অপমান।
অন্যদিকে ডাঃ নাসির উদ্দিন দীর্ঘ বিশ বছরের ও বেশী সময় ধরে দুমকি জনপদে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
তার সম্পর্কে কেউ কখনো আমাকে বাজে কিছু বলেনাই।
দুমকির অনেক লোককে তিনি পটুয়াখালী চেম্বারেও ফ্রি দেখে দেন দেখেছি,টেস্টে সর্বোচ্চ ডিসকাউন্ট করে দেন দেখেছি।
ভাল-মন্দ মিলিয়েই তো মানুষ।
আমি রাজিবুল কে বোঝাতে চাইছিলাম এইসব ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি নিজেরা বসেই সমাধান করা যায় কিনা।
পাবলিকলি একজন ডাক্তারের মান-সম্মান এভাবে নস্ট করা সমীচীন নয়।
আজ যাকে নিয়ে লিখলা,আল্লাহ চায়তো দেখবা কোন একদিন চরম বিপদে উনি ই তোমার পাশে একমাত্র ডাক্তার।
যাই হোক,ঘটনার সত্যমিথ্যা এখনো আমার কাছে ক্লিয়ার না।
সবাই নিজের দোষ আড়াল করবে এটাই নিয়ম।
তবে আমরা হুজুগে বাঙালী কিছু একটা শুনলেই যে আজেবাজে মন্তব্য ছুড়ে দেই এটা ঠিক না।
মনে রাখবেন এক হাতে কোনদিন তালি বাজেনা।
আমি অনেকবার রাজিবুল কে ফোন দিয়েছি,টেক্সট করেছি পোস্টটি রিমুভ করতে কিন্তু সে তা করেনাই।
তাই এখানে লিখতে বাধ্য হলাম।
কেউ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কস্ট পেলে সরি।
আমরা কেউ দূরের না।মিলেমিশে থাকাটাই সবার জন্য কল্যাণকর।
0 Comments